Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

স্বাস্থ বিষয়ক তথ্য

সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত

 

বাংলা নামঃ কালজিরা, কালোজিরা, কালিজিরা।

বৈজ্ঞানিক নাম : Nigella sativa

ইংরেজি নাম : fennel flower, nutmeg flower, Roman coriander, blackseed or black caraway।

পরিচিতি: Ranunculaceae গোত্রের উদ্ভিদ। লম্বায় ২০-৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া। পত্রদণ্ডের উভয় দিকে যুগ্মপত্র হয়। পাতাগুলো ছোটো ফলকের মতো বিভাজিত অবস্থায় দেখা যায়। সাধারণত এর ফুলের রঙ হয় সাদা বা নিষ্প্রভ নীল। তবে পীতবর্ণের ফুলের কালিজিরা গাছও দেখা যায়। ফুলের পাঁচটি পাপড়ি থাকে। পুংকেশরের সংখ্যা অনেক। এর গর্ভকেশর বেশ লম্বা হয়। বাংলা কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে এর ফুল ফোটে এবং শীতকালে ফল ধরে। ফলের আকার গোলাকার এবং প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টি বীজ থাকে। এর বীজ কালো বর্ণের এবং প্রায় ত্রিকোণাকার। এর বীজগুলো একটি খোলসের ভিতরে থাকে। খোলসের ভিতরে অনেক বীজ থাকে। এর বীজগুলোতে তেল থাকে। এই উদ্ভিদের বীজ ব্যবহার করা হয়। মূলত এই বীজকেই কালিজিরা বলা হয়।

ধর্মীয় কারণঃ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা কালিজিরাকে একটি অব্যর্থ রোগ নিরাময়ের উপকরণ হিসাবে বিশ্বাস করে। এর সাথে একটি হাদিস জড়িত আছে। হাদিসটি হলো— '..আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “এ কালিজিরা সাম ব্যতীত সমস্ত রোগের নিরাময়। আমি বললাম: সাম কি? তিনি বললেন: মৃত্যু!” [বুখারী: ৫৬৮৭] আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য তিনি আমাদের কালোজিরা ও মধু সর্ম্পকে অবগত করেছেন।

কি আছে কালোজিরায়: কালিজিরার তেলে ১০০টিরও বেশি উপযোগী উপাদান আছে। এতে আছে প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি। কালিজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন ও স্থায়ী তেল। এতে আরও আছে আমিষ, শর্করা ও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিডসহ নানা উপাদান। পাশাপাশি কালিজিরার তেলে আছে লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, নিয়াসিন ও ভিটামিন-সি। এর মধ্যে রয়েছে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বো-হাইড্রেট ছাড়াও জীবাণু নাশক বিভিন্ন উপাদান সমূহ। এতে রয়েছে ক্যন্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হর্মোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক।

কালিজিরার স্বাস্থ্যগুন:
» তিলের তেলের সাথে কালিজিরা বাঁটা বা কালিজিরার তেল মিশিয়ে ফোড়াতে লাগালে ফোড়ার উপশম হয়।
» অরুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া, সর্দি, কাশি, হাঁপানি নিরাময়ে কালিজিরা সহায়তা করে। ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কালিজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
» চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্কিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি, মস্তিষ্কশক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়াতেও কালোজিরা উপযোগী।
» মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
» কালোজিরা চূর্ণ ও ডালিমের খোসাচূর্ণ মিশ্রন, কালোজিরা তেল ডায়াবেটিসে উপকারী।
» চায়ের সাথে নিয়মিত কালোজিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল বা আরক মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হয়, তেমনি মেদ ও বিগলিত হয়।
» কফির সাথে কালোজিরা সেবনে স্নায়ুবিক উত্তেজনা দুরীভুত হয়।
» মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
» জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করার জন্য কালিজিরা যথেষ্ট উপকারী বন্ধু। এতে রয়েছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায়।
» সন্তান প্রসবের পর কাঁচা কালিজিরা পিষে খেলে শিশু দুধ খেতে পাবে বেশি পরিমাণে।
» কালিজিরায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল এজেন্ট, অর্থাৎ শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এই উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ (ছোঁয়াচে রোগ) হয় না।
» কালিজিরা মেধার বিকাশের জন্য কাজ করে দ্বিগুণ হারে। কালিজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক।
» দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালিজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে; জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মরে।
» কালিজিরা কৃমি দূর করার জন্য কাজ করে।
» দেহের কাটা-ছেঁড়া শুকানোর জন্য কাজ করে।
» কালোজিরার যথাযথ ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি অজির্ত হয়। এর তেল ব্যবহারে রাতভর প্রশান্তিপর্ন নিদ্রা হয়।
» নারীর ঋতুস্রাবজনীত সমস্যায় কালিজিরা বাটা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
» প্রসূতির স্তনে দুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য, প্রসবোত্তর কালে কালিজিরা বাটা খেলে উপকার পাওয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কালিজিরা খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে।
» প্রস্রাব বৃদ্ধির জন্য কালিজিরা খাওয়া হয়।
» বহুমুত্র রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং নিম্ন রক্তচাপকে বৃদ্ধি করে ও উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাস করে।
» মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
» মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত আছে যে, কালিজিরা যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। তবে পুরানো কালিজিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

 

তুলসী গাছ ও এর পাতার স্বাস্থ্যগুন

 

বাংলা নামঃ তুলসি
অন্যান্য নাম: Holy basil, Tulsi तुलसी (হিন্দি, তামিল, তেলেগু), Trittavu (মালয়ম), Tulshi (মারাঠী)
বৈজ্ঞানিক নামঃ Ocimum tenuiflorum L. - holy basil
ইংরেজি নামঃ Sacred Basil, Holy Basil.

পরিচিতিঃ সাধারনত ভেজা মাটিতে তুলসী গাছের জন্ম হয়ে থাকে । তুলসী শাখা প্রধান গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। গাছটির সমস্ত শরীরে একধরণের সুক্ষ্মতা বিদ্যমান । পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদ ৭৫-৯০ সে.মি. হয়। শাখা-প্রশাখা শক্ত ও চতুষ্কোনাকার। তুলসী ঔষধি ও চিরহরিৎ গুল্মজাতীয় গাছ। পাতা ২ থেকে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তবে এর পাতার কিনারা খাঁজকাটা। শাখা-প্রশাখার সামনের অংশ থেকে পাঁচটি ফুলের ডাল বের হয় এবং প্রতিটি ডালের চারদিকে ছাতার মতো ১০ থেকে ১২টি স্তরে থরেথরে ফুল ধরে। তুলসী ফুল ছোট পার্পেল বা হালকা লালচে বঙের হয়, সিলিন্ডারাকৃতির স্পাইকে ফুল গুলো ঘন হয়ে জন্মে থাকে। ফল গুলো ও ছোট, বীজ হলুদ বা একটু লালচে ধরনের। তুলসী গাছের ফুল, ফল এবং পাতার একটি ঝাঁজালো গন্ধ আছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বত্র এ গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এ গাছের গুণাগুণের কথা বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থেও উল্লেখ আছে।

ধর্মীয় কারণঃ ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে তুলসীকে সীতাস্বরূপা, স্কন্দপুরাণে লক্ষীস্বরূপা, চর্কসংহিতায় বিষ্ণুর ন্যায় ভুমি, পরিবেশ ও আমাদের রক্ষাকারী বলে বিষ্ণুপ্রিয়া, ঋকবেদে কল্যাণী বলা হয়েছে । স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু তুলসী দেবীকে পবিত্রা বৃন্দা বলে আখ্যায়িত করে এর সেবা করতে বলেছেন।

পরিবেশগত কারণঃ পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তুলসীগাছ একমাত্র উদ্ভিদ যা দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহ করে বায়ু বিশুদ্ধ রাখে যেখানে অন্য যেকোন গাছ রাত্রিতে কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে তাই রাতের বেলাতে তুলসীতলায় শয়ন করাও ব্যক্তির জন্য উপকারী।এছাড়া তুলসীগাছ ভুমি ক্ষয়রোধক এবং তুলসী গাছ লাগালে তা মশা কীটপতঙ্গ ও সাপ থেকে দূরে রাখে।

তুলসীর স্বাস্থ্যগুন:
» চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সংগে বেটে মাখলে ভালো হয়ে যায়।
» উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমিয়ে হূৎপিণ্ডের রক্ত সরবরাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
» হাড়ের গাঁথুনিতে ব্যথা দূর করে এবং শরীরের কাটাছেঁড়া দ্রুত শুকাতে অবদান রাখে।
» ঠাণ্ডা মরসুমে ছোট বাচ্চাদের তুলসির পাতা খাওয়ালে কৃমি দূর হবে এবং মাংসপেশি ও হাড় হবে শক্তিশালী।
» জ্বর হলে পানির মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করে নিন ৷ অথবা উপরিউক্ত তিনটে দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা পানি দিয়ে সেবন করুণ । জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।
» কাশি হলে তুলসী পাতা এবং আদা একসাথে পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷
» ডাইরিয়া হলে ১০ থেকে বারোটি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন।
» মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ।
» আপনার শরীরে যদি কোনরকম ঘা যদি থাকে তাহলে তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান।
» শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ ওঠে যাবে।
» ত্বকের রোশনি বাড়ানোর জন্য, ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান।
» প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করতে হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন । তুলসি গাছের বীজও যথেষ্ট উপকারী। এর বীজ শুকিয়ে মিহি করে খেলে প্রস্রাবের ইনফেকশনজনিত সমস্যা ভালো হয়। পুরুষত্বহীনতা দূরীকরণে এই পাতার অবদান অপরিহার্য।
» যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
» সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবার রুচী বাড়ে।
» নিয়মিত তুলসীর রস পানে হৃদরোগেও উপকার পাওয়া যায়।
» চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
» তুলসীতে Eugenol অধিক পরিমাণে থাকায় তা Cox-2 Inhibitor রূপে কাজ করে বলে তা ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
» Hypoglycemic drugs এর সাথে তুলসী খেলে তা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
» তেজস্ক্রিয়তার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কোষসমুহকে মেরামত করে।
» চর্বিজনিত হৃদরোগে এন্টি অক্সিডেন্টের ভুমিকা পালন করে।
» তুলসী একশেরও বেশি Phytochemicals (যেমন oleanolic acid, beta caryophyllene ইত্যাদি)বহন করে বলে ক্যান্সার চিকিত্সারয় ব্যবহৃত হয়।
» তুলসীর অ্যালকোহলিক নির্যাস Immune system এর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
» তুলসী স্নায়ুটনিক ও স্মৃতিবর্ধক।
» শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্নরোগ যেমন ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানি প্রভৃতি রোগের নিরাময়ক।
» সর্দি, কাশি, জ্বর, বমি, ডায়ারিয়া, কলেরা, কিডনির পাথর, মুখের আলসারসহ চোখের বিভিন্ন রোগে ইহা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
» দাঁতের রোগে উপশমকারী বলে টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

 

সুস্বাস্থ্যে থানকুনি পাতা

বাংলা নাম থানকুনি। অঞ্চলভেদে এটি টেয়া, মানকি, তিতুরা, থানকুনি, আদামনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি , ধূলাবেগুন, আদাগুনগুনি নামে পরিচিত। ইংরেজি নাম Indian Pennywort, ল্যাটিন নাম Centella asiatica, বৈজ্ঞানিক নাম Centella asiatica Urban এবং পরিবার Mackinlayaceae.

ব্যবহার্য অংশ: মূল, কান্ড , ও পাতা।
থানকুনি একটি অনাবাদী ঔষধি গাছ। এটি বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে, মাঠে স্যাঁতস্যাতে জায়গাগুলোতে বর্ষাকালে বেশি পাওয়া যায়।এছাড়া সারা বছরই কম-বেশি পাওয়া যায়।
পরিচিতিঃ এই গাছটি ক্ষুদ্র লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা ক্ষুদ্র গোলাকৃতির। পাতার ধারে খাঁজ রয়েছে। বাংলাদেশের সর্বত্র এই গাছটিকে দেখতে পাওয়া যায়। তবে উপকূলীয় লবনাক্ত আবহাওয়ায় এটি ভালো জন্মে। গ্রামীণ সাধারণ মানুষের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয়।
বংশবিস্তার : বসন্তকালে থানকুনি লতার ফুল আসে এবং গ্রীষ্মতকালে ফল পাকে। বীজের মাধ্যমেও অঙ্গজ জনন উভয়ভাবেই থানকুনির বংশবিস্তার হয়। প্রতিটি গিট বা node থেকে শিকড় বের হয় এবং শিকড়সহ লতা এনে আর্দ্র জমিতে রোপন করলেই থানকুনি জন্মে। তবে খেয়াল রাখবে হবে যে এটি আর্দ্র মাটি পচন্দ করলেও জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। বাংলাদেশের মাটি থানকুনি জন্মানোর জন্য খুবই উপযোগী হলেও নার্সারীতেও এ লতার চারা পাওয়া কঠিন। তবে গ্রামাঞ্চলে এটি সর্বত্রই পাওয়া যায়।
থানকুনির গুণাগুণ ও ব্যবহার
থানকুনিতে যে সকল রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে সে গুলা হলো :
» Indocentelloside
» Brahmoside
» Brahminoside
» Asiaticoside
» Thankuniside
» Isothankuniside,
» Triterpene glycosides
» Indocentoic, brahmic
» Mesoinositol
» Oligosaccharide
» Centellose
» Kaempferol
জ্বর : থানকুনি পাতার রস ১ চামচ ও শিউলি পাতার রস ১ চামচ মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে জ্বর সারে।
পেটের পীড়া : অল্প পরিমাণ আমগাছের ছাল, আনারসের কচি পাতা ১টি, কাঁচা হলুদের রস, ৪/৫ টি থানকুনি গাছ শিকড়সহ ভাল করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের পীড়া ভাল হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি কার্যকর।
গ্যাস্ট্রিক : আধা কেজি দুধে ১ পোয়া মিশ্রি ও আধা পোয়া থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভাল হয়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি : বেগুন/পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুকতা রান্না করে প্রতিদিন ১ মাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
রক্ত দূষণ রোধে থানকুনি : প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু/ মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভাল হয়।
বাক স্ফুরনেঃ যে সব বাচচা কথা বলতে দেরি করে অথবা অস্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে ১ চামচ করে ধান কুনি পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে ২০/২৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের সাথে কিছুদিন খাওয়ালে অসুবিধাটা সেরে যায়।
খুসখুসে কাশিতে : ২ চামচ থানকুনির রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। ১ সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে।
আমাশয় : প্রতিদিন সকালে ৫/৭ টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে ৭ দিন খেলে আমাশয় ভাল হয়। অথবা, থানকুনি পাতা বেটে পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দুই চামচ দিনে দুই বার খেলে আমাশয় ভাল হয়।
পেট ব্যথা : থানকুনি পাতা বেটে গরম ভাতের সাথে খেলে পেট ব্যথা ভাল হয়।
লিভারের সমস্যা : প্রতিদিন সকালে থানকুনির রস ১ চামচ, ৫/৬ ফোঁটা হলুদের রস (বাচ্চাদের লিভারের দোষে) সামান্য চিনি ও মধুসহ ১ মাস খেলে লিভারের সমস্যা ভাল হয়।
লাবণ্যতা : যদি মুখ মলিন হয়, লাবণ্যতা কমে যায় তবে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধ দিয়ে খেতে হবে। নিয়মিত করলে উপকার পাবেন।
দূষিত ক্ষত : মূলসহ সমগ্র গাছ নিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে দূষিত ক্ষত ধুতে হবে।
মুখে ঘা : থানকুনি পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গারগিল করতে হবে।
আঘাত : কোথাও থেঁতলে গেলে থানকুনি গাছ বেটে অল্প গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ দিলে উপকার পাবেন।
সাধারণ ক্ষত : থানকুনি পাতা বেটে ঘিয়ের সঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে তা ক্ষত স্থানে লাগাতে হবে।
চুল পড়া : অপুষ্টির অভাবে, ভিটামিনের অভাবে চুল পড়লে পুষ্টিকর ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে।
পেটের দোষ : মলের সঙ্গে শ্লেষ্ণা গেলে, মল পরিষ্কারভাবে না হলে, পেটে গ্যাস হলে, কোনো কোনো সময় মাথা ধরা এসব ক্ষেত্রে ৩-৪ চা চামচ থানকুনি পাতার গরম রস ও সমপরিমাণ গরুর কাঁচা দুধ মিশিয়ে খেতে হবে। নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।
স্মরণশক্তি : মনে না থাকলে আধা কাপ দুধ, ২-৩ তোলা থানকুনি পাতার রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে।
নাক বন্ধ : ঠাণ্ডায় নাক বন্ধ হলে, সর্দি হলে থানকুনির শিকড় ও ডাঁটার মিহি গুঁড়ার নস্যি নিলে উপকার পাওয়া যায়।

 

আদার ভেষজ গুন

প্রাতে খেলে নুন আদা অরুচি থাকে না দাদা।’ আরো কতশত উপকারিতা বিজ্ঞানীরা বের করেছেন তা বলাই বাহুল্য। কৃত্রিম ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফ্যাসাদে পড়ে এখন সবাই একটু শান্তি খুঁজছেন প্রাকৃতিক ও ভেষজ দ্রব্যের দিকে। এক নজরে দেখে নিই কি গুন আছে আদায়:
» আদার রস শরীর শীতল করে এবং হার্টের জন্য উপকারী।
» কাশি এবং হাঁপানির জন্য আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে সেবন করলে বেশ উপশম হয়।
» ঠান্ডায় আদা ভীষণ উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, যা শরীরের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। জ্বর জ্বর ভাব, গলাব্যথা ও মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
» বমি বমি ভাব দূর করতে এর ভূমিকা অপরিহার্য। তাই বমি বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে মুখের স্বাদ বৃদ্ধি পায়।
» অসটিও আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস-এই অসুখগুলোয় সারা শরীরের প্রায় প্রতিটি হাড়ের জয়েন্টে প্রচুর ব্যথা হয়। এই ব্যথা দূর করে আদা। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদার পুষ্টিগুণ বেশি।
» মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিসজনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা। গর্ভবতী মায়েদের সকালবেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে সকালবেলা শরীর খারাপ লাগে। কাঁচা আদা দূর করবে এ সমস্যা।
» দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা জীবাণুকে ধ্বংস করে।
» দেহের কোথাও ক্ষতস্থান থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট, যা যেকোনো কাটাছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো করে।
» রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতেও আদা দারুণ কার্যকর। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে খেলে বাড়বে হজম শক্তি।
» আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপা রোধে আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া যারা গলার চর্চা করেন তাদের গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা খুবই উপকারী।
» যাদের মোশন সিকনেস আছে, তারা আদার সাহায্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
» ঠান্ডায় টনসিলাইটিস, মাথাব্যথা, টাইফয়েড জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হওয়া, বসন্তকে দূরে ঠেলে দেয় আদা। ওভারির ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আদা।

বেগুনের গুন

অনেকেরই ধারনা বেগুনের মধ্যে বুঝি পুষ্টিগুন তেমন একটা নেই। এ ক্ষেত্রে এর নামটাও একটা ভূমিকা রাখে কিনা তাও বলা মুশকিল। তবে ব্যাপার যাই হোক, আপনি জেনে হয়ত অবাক হবেন এই বেগুন কিন্তু বেশ পুষ্টিগুন সম্পন্ন একটি সবজী আর এটি আমাদের দেশে বেশ সহজলভ্যও বটে। এবার দেখি কি গুন আছে এই বেগুনে:
» কোলেস্টেরল হলো চর্বিজাতীয় উপাদান, যা রক্তে জমে। যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, তারা কোনো রকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই খেতে পারে বেগুন। কারণ বেগুনে কোনো চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই।
» পাকস্থলী, কোলন, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদ্রান্ত্রের (এগুলো পেটের ভেতরের অঙ্গ) ক্যানসারকে প্রতিরোধ করে। যেকোনো ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করে বেগুন।
» বেগুনে আয়রণও রয়েছে, যা রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে। তাই রক্তশূন্যতার রোগীরাও খেতে পারে এই সবজি। এতে চিনির পরিমাণ খুবই সামান্য। তাই ডায়বেটিসের রোগী, হূদেরাগী ও অধিক ওজন সম্পন্নব্যক্তিরা নিঃসংকোচে খেতে পরে বেগুন।
» বেগুনে রয়েছে রিব্লোফ্ল্যাভিন নামক উপাদান। এই উপাদান জ্বর হওয়ার পরে মুখ ও ঠোঁটের কোণের ঘা, জিহ্বার ঘা প্রতিরোধ করে। দূর করে জ্বর জ্বর ভাব।
» পাকস্থলী, কোলন, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদ্রান্ত্রের (এগুলো পেটের ভেতরের অঙ্গ) ক্যানসারকে প্রতিরোধ করে। যেকোনো ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করে বেগুন।
» বেগুন ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ‘ই’ এবং ‘কে’ (ক) সমৃদ্ধ সবজি। ভিটামিন ‘এ’ চোখের পুষ্টি জোগায়, চোখের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। আর ভিটামিন ‘সি’ ত্বক, চুল, নখকে করে মজবুত। দেহে রক্ত জমাট বাঁধার বিরুদ্ধে কাজ করে ভিটামিন ‘ই’ ও ‘কে’। এই ভিটামিন চারটি শরীরের রোগপ্রতিরোধক্ষমতাকে করে বহুগুণে কার্যকর।
» প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ রয়েছে এই সবজিতে, যা খাবার হজমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এর ভূমিকা অনেক।
» ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম দাঁত, হাড় ও নখ শক্ত করে। বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম, যা দাঁতকে করে মজবুত, দাঁতের মাড়িকে করে শক্তিশালী। ভঙ্গুরতা রোধ করে নখের।
» অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে বেগুন পরিহার করা উচিত। বেগুন অধিকাংশ মানুষের অ্যালার্জি বাড়িয়ে দেয়।
» জিঙ্কের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ডায়রিয়া চলাকালীন বেগুনের তরকারি খাওয়া অনুচিত। ডায়রিয়া ভালো হয়ে যাওয়ার পরে বেগুনের তরকারি খাবেন।
» ডায়েরিয়া হওয়ার পর দেহে জিঙ্কের ঘাটতি হয়। এই ঘাটতি পূরণ করে বেগুন। জিঙ্কের ঘাটতি বেশি হয় মূলত শিশুদের।

হরীতকীর ঔষধিগুন

হরীতকী বললেই ত্রিফলার কথা আসে। ত্রিফলা মানে তিনটি ফলের সমাহার। এই তিনটি ফল হলো- আমলকী, হরীতকী ও বহেড়া। তবে তিনটি ফলের মধ্যে হরীতকীর রয়েছে অসাধারণ গুণ। এ ফলটি Combretaceae গোত্রের এক ধরনের পাতাঝরা গাছ। বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia Chebula। আমাদের দেশের সর্বত্র হরীতকী কম-বেশি পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বনাঞ্চলে।

হরীতকীর গাছ সাধারণত ১৫ থেকে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। বৃক্ষটির ব্যাস পরিমাপ করলে দেখা যায়, তা ৫০ থেকে ৮০ সেন্টিমিটারের বেশি হয় না। গাছের ওপরের দিকটা ছাতার মতো এবং ডালপালা ছড়ানো। এর ছাল পুরু এবং অসংখ্য ফাটলযুক্ত। ছাল সাধারণত ধূসর বর্ণের কিংবা প্রায় কালো রঙের। পাতা হয় সাধারণত ডিম্বাকার এবং উপবৃত্তাকার। হরীতকীর ফল শাঁসালো এবং একবীজী। স্বাদ তিতা। এটি ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেরল-সমৃদ্ধ। মজার ব্যাপার হলো, কাঁচা অবস্থায় হরীতকী চিবিয়ে পানি খেলে বেশ মিষ্টি লাগে এবং মুখে রুচি আসে। ফল শক্ত আবরণযুক্ত এমনকি পাকার পরও শক্ত আঁশযুক্ত। ফল সাধারণত ২.৫ থেকে ৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ লম্বাটে এবং দুই দিকে ক্রমাগত সরু। ফলে পাক ধরলে হলুদাভ সবুজ বর্ণ ধারণ করে এবং চিবুলে তিতকুটে লাগে। ফলের কোনো কিছু ফেলনা নয়। বীজের ভেতরের শাঁসও মজা করে খাওয়া যায়। হরীতকী ভেষজ গুণসমৃদ্ধ। আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ত্রিফলা ব্যবহৃত হয়।

ব্যবহার: হরীতকী দেহের অন্ত্র পরিষ্কার করে এবং একই সঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিঁচুনি কমায়। হৃৎপিণ্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে। এটা রেচক, কষাকারক, পিচ্ছিলকারক,পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়বিক শক্তিবর্ধক। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়বিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। হরীতকীতে অ্যানথ্রাকুইনোন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরীতকী। অ্যালার্জি দূর করতে হরীতকী বিশেষ উপকারী। হরীতকী ফুটিয়ে সেই পানি খেলে অ্যালার্জি কমে যাবে। হরীতকীর গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকবে। হরীতকীর গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরীতকী পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন। দাঁতে ব্যথা হলে হরীতকী গুঁড়া লাগান, ব্যথা দূর হবে। রাতে শোয়ার আগে অল্প বিট নুনের সঙ্গে ২ গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরীতকীর গুঁড়া মিশিয়ে খান। পেট পরিষ্কার হবে। কলেরা ও আমাশয় নিরাময়ে এর যথেষ্ট ব্যবহার রয়েছে। হরীতকী চূর্ণ ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পিত্তশূল দূর হয়। বিশেষভাবে পরিশোধনের মাধ্যমে পাইলস, হাঁপানি, চর্ম, ক্ষত, কনজাংটিভাইটিস রোগেও হরীতকী ব্যবহৃত হয়। হরীতকীর কাঠ খুবই শক্ত এবং টেকসই। গৃহনির্মাণ এমনকি সুদৃশ্য আসবাবপত্র তৈরিতে এ কাঠ ব্যবহৃত হয়।

সুস্বাস্থ্যে থানকুনির রস

প্রকৃতিতে আমাদের অগোচরে কত গাছগাছড়াই তো ছড়িয়ে আছে, এর কটাকেই বা আমরা চিনি।
জংলি উদ্ভিদ হিসেবে আধুনিক সমাজে এগুলোর অনেকটাই অপাঙক্তেয়। অথচ এসব উদ্ভিদের প্রায় সবগুলোই কোনো না কোনোভাবে ভেষজগুণে সমৃদ্ধ।
থানকুনি গাছ বা থানকুনি পাতা তেমনই এক ধরণের উদ্ভিদ। ভেষজগুণে সমৃদ্ধ থানকুনির রসে রয়েছে শরীরের জন্য প্রচুর উপকারী খনিজ ও ভিটামিন জাতীয় পদার্থ।
থানকুনি পাতার রস নিয়মিত সেবনে ত্বকের সতেজতা বৃদ্ধি পায়। রূপ সচেতন নারীরা ইচ্ছে করলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। দেখবেন ধীরে ধীরে উপকার পাচ্ছেন।
এছাড়া ঘন ঘন জ্বর বা আমাশয় থেকে রক্ষা পেতেও খেতে পারেন থানকুনির রস। উপকার পাবেন সুনিশ্চিত ।
আমাদের অনেকেরই মুখে দেখা যায় ঘায়ের সমস্যা। থানকুনি পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে কুলি করুন নিয়মিত। দেখবেন মুখে ঘায়ের প্রকোপ কমে গেছে অনেকখানিই।
বিভিন্ন কারণেই অকালে চুল ঝড়ে যেতে পারে। অনেক ওষুধ পথ্য খেয়েও দেখা যাচ্ছে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। চেষ্টা করে দেখুন থানকুনি পাতার রস।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খান পাঁচ-ছয় ফোটা থানকুনির রস। দেখবেন ধীরে ধীরে উপকার পাচ্ছেন, কমে যাচ্ছে চুল পড়ার হার।
ছেলেবেলায় যেসব শিশুরই কথা জড়িয়ে যায়, সেসব শিশুর উদ্বিগ্ন মায়েদের দুশ্চিন্তা অবসানে রয়েছে থানকুনি গাছ। প্রতিদিন এক চামচ করে থানকুনি পাতার রস গরম করে শিশুকে খাওয়ান, দেখবেন ধীরে ধীরে কথার অস্পষ্টতা কেটে যাচ্ছে।
আবার আবহাওয়ার তারতম্য হলে সর্দি গরমিতে ভোগেন অনেকেই। একটুতেই ঠান্ডা লেগে যায় তাদের। তাদের জন্যও সমাধান রয়েছে থানকুনি পাতার রসেই।
২০-২৫ ফোটা থানকুনির রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত খান, দেখবেন ঠাণ্ডা লাগার অস্বস্তিকর অনুভূতি দূর হয়েছে অনেকখানিই।
এখন প্রশ্ন হলো ব্যস্ত নগরজীবনে থানকুনি পাতা খুঁজে পাবেন কোথায়। গ্রামে অবশ্য থানকুনি গাছের অভাব নেই। সহজেই দেখা মেলে ঝোপে জঙ্গলে। শহরাঞ্চলে থানকুনির খোঁজ পাওয়া একটু কঠিনই বটে।
তবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কাঁচা বাজারগুলোতে একটু খোঁজ করলেই মিলবে থানকুনি পাতা। ফ্রিজেও কয়েকদিন রাখতে পারবেন থানকুনি পাতা।
অথবা যারা আরও একটু সচেতন তারা ইচ্ছে করলেই বাড়ির ছাদে অথবা বারান্দার এক কোনায় টবের ভেতরই লাগাতে পারেন থানকুনি গাছ। চারা পেতেও তেমন কোনো সমস্যা হবে না। যে কোনো নার্সারিতেই একটু খুঁজলেই মিলবে থানকুনি গাছ।

শসার উপকারিতা

প্রতিদিনের খাবারে সালাদ হিসেবেই শসার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তবে খাবারের সাথে অনুষঙ্গ হিসেবে শসার কদর বেশি হলেও পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে শসা মোটেও পিছিয়ে নেই। শসা গোর্ড পরিবারের কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। শসা এক প্রকারের ফল। লতানো উদ্ভিদে জন্মানো ফলটি লম্বাটে আকৃতির এবং প্রায় ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রং সবুজ। তবে পাকলে হলুদ হয়। ভেতরে সাদাটে সবুজ রঙের হয়, এবং মধ্যভাগে বিচি থাকে। এর উত্পত্তি ভারতবর্ষে হলেও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই জন্মে। এটি সাধারণত গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জাতের শসা রয়েছে। এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং জলের পরিমাণ বেশি থাকে। খোসাসহ একটি কাঁচা শশা'র প্রতি ১০০ গ্রামে ক্যালোরির পরিমাণ ২০ কিলো ক্যালোরি। বাংলাদেশে শশা প্রধানত সালাদ হিসেবে ব্যবহূত হয়। শসা যতটাই সাদাসিধে হোক না কেন খাদ্যগুণ বিচারে এটি অনন্য।

পুষ্টি উপাদান: শসা ভিটামিন এবং মিনারেলেস পরিপূর্ণ একটি সবজি। এর ৯৬ শতাংশ পানি। শসা ভিটামিন-কে, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ফলিক এসিড, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের উত্তম উৎস। এ ছাড়া রিবোফ্লাবিন, প্যান্টোথেনিক এসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সালফার, সিলিকা এবং ভিটামিন বি-৬ আছে বেশি পরিমাণে। শসা থেকে খাদ্য আঁশ পাওয়া যায়। তবে এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট আর কোলেস্টরলের পরিমাণ খুব কম বলে এটি প্রায় সব ধরনের মানুষের জন্যই দারুণ উপকারী। এতে আরো রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, কিউকারবিটাকিন্স, লিগনান্স এবং ফ্লাভনয়েডস। এ ছাড়া কম কোলেস্টরল ও কম ফ্যাট-যুক্ত শসা থেকে বাড়তি ক্যালোরি পাওয়া যায় বলে যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য শসা সব সময়ই আদর্শ একটি খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। এতে কোনো সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই।

স্বাস্থ্য ও ঔষধি গুণ:
» শসার মাল্টি ভিটামিনস ও মাল্টি মিনারেলস প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং ভিটামিন ও মিনারেলসের অভাবজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
» শসার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
»এর ম্যাগনেসিয়াম রক্ত চলাচল সচল করে।
» শসার আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।
» এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস; লিগনান্স হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানোসহ জরায়ু ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
» এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। শরীরের জমানো ক্ষতিকর ও বিষাক্ত উপাদানগুলো অপসারণ করে রক্তকে পরিষ্কার রাখে।
» শসা বুক জ্বলা, পাকস্থলীর এসিডিটি এমনকি গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি দিতে পারে।
» প্রতিদিন শসার জুস খেলে অ্যাকজিমা এবং গাউটে উপকার পাওয়া যায়। এটি ডায়াবেটিসও কিছুটা উপশম করে।
» বাত-ব্যথা প্রশমনের জন্য শসা ও গাজর একসঙ্গে জুস বানিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
» শসার জুস কিডনি এবং গলব্লাডারের পাথর অপসারণে সহায়তা করে।
» শসা হাত ও পায়ের নখ ভাঙা প্রতিরোধ করে।
» পাইরিয়ার কারণে দাঁত ও মাড়ির রোগে শসা উপকারী।
» শসাতে পানি আছে শতকরা ৯৫ভাগ। এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে। শরীর শীতল রাখতে সহায়তা করে।
» খোসাসহ শসা খাবার অভ্যাস আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য কে কমিয়ে দেবে অনেকখানি এবং আপনার অন্ত্র থেকে দেহের জন্য তিকর পদার্থগুলোকে বের করে দিয়ে অন্ত্রের ক্যান্সারের মত রোগ থেকে আপনাকে দেবে সুরক্ষা।
» শসায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। এই পটাশিয়ামকে বিশেষজ্ঞরা হৃদযন্ত্রের বন্ধু বলে থাকেন। কারণ এই আয়নটি রক্তচাপ কমিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
» শসায় পানি এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি মৃদু মাত্রার মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। যার দরুণ উচ্চরক্তচাপ ও ওজন কমাতে শসার ভূমিকা বেশ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া খাদ্যতালিকায় শসাকে নিয়মিত রেখে আপনি আপনার দেহের ইউরিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কিডনি ও মূত্রথলির কতিপয় পাথর থেকে পেতে পারেন সুরক্ষা।
» শসায় বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ল্যুটেইন প্রভৃতি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
» এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের সুরায় বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। দেহযন্ত্রের নানাবিধ ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হওয়া তিকর মুক্তআয়নগুলো (free redicals) থেকে শরীরকে সুরতি রাখে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো। তারুণ্য ধরে রাখতেও এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর জুড়ি নেই।
» শুনতে একটু আজব হলেও একথা সত্যি যে শসায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে। ভিটামিন কে আমাদের দেহের হাড়গুলোকে সুস্থ রাখতে সবসময় অনবদ্য। শুধু তাই নয় স্নায়ুর ক্ষতিগ্রস্ততাকে কমিয়ে ‘আলঝেইমার ডিজিজ’-এর মত রোগেও নিরীহ শসা ভূমিকা রাখতে পারে বলে সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা মতপ্রকাশ করেছেন।
» সৌন্দর্য চর্চায়ও আপনার সঙ্গী হতে পারে এই শসা। ত্বকের নানাবিধ সমস্যা, চোখের চারপাশের ফোলাভাবসহ ত্বকের সকল প্রকার কান্তি দূর করে ত্বককে প্রাণবন্ত করে তুলতে শসার ভূমিকা খুব একটা কম নয়।

 

কচু শাকের পুষ্টি

কচু একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিকর সবজি। এ দেশে কচু তেমন সমাদৃত নয় এবং অনেকটা অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়। অথচ কচু শাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এ শাক দুই প্রকার যথা :
(১) সবুজ কচু শাক ও
(২) কালো কচু শাক।
খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ ও কালো কচু শাকে যথাক্রমে ১০২৭৮ ও ১২০০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন রয়েছে। এ ক্যারোটিন থেকেই আমরা ভিটামিন ‘এ’ পেয়ে থাকি। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ কচু শাক থেকে ৩.৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ১.৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.২২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফেবিন), ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ ও ৫৬ কিলো ক্যালোরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়।
সবুজ কচু শাকের চেয়ে কালো কচু শাক অনেক বেশি পুষ্টিকর। প্রতি ১০০ গ্রাম কালো কচু শাকে ৬.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৮.১ গ্রাম শর্করা, ২.০ গ্রাম চর্বি, ৪৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩৮.৭ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিনি বি-১ (থায়ামিন), ০.৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফেবিন), ৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ ও ৭৭ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি রয়েছে।দেহের পুষ্টি সাধনে এসব পুষ্টি উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কচু শাকে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এ শাকের লৌহ দেহ কর্তৃক সহজে আত্তীকরণ হয়। প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেয়া ছাড়াও প্রাচীনকাল থেকে কচুকে বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। মুখী ও পানিকচুর ডগা দেহের ত রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া জ্বরের রোগীকে শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য দুধকচু খাওয়ানো হয়। ওলকচুর রস, উচ্চরক্তচাপের রোগীকে প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়ানো হয়। আবার মান কচুর ডগা ও পাতা বাতের রোগীকে খাওয়ানোর প্রথা এ দেশের ঘরে ঘরে প্রচলিত রয়েছে। কচু শাকে পর্যাপ্ত আঁশ থাকায় এটি দেহের হজমের কাজে সহায়তা করে।